SG | ১৬ মার্চ ২০২৫ ২২ : ৪৩Sourav Goswami

আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিশ্ববিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী এবং ২০০২ সালের অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী ড্যানিয়েল কাহনেম্যান তাঁর জীবনের শেষ সিদ্ধান্ত হিসেবে স্বেচ্ছা আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন। জানা গেছে, কাহনেম্যান গত বছর মার্চ মাসে সুইজারল্যান্ডে একটি স্বেচ্ছা আত্মহত্যার কেন্দ্রে তাঁর জীবন সমাপ্ত করেন।

রিপোর্ট অনুসারে, মৃত্যুর ঠিক আগে তিনি তাঁর বন্ধুদের একটি ইমেইল পাঠান যেখানে তিনি লেখেন, “আমি অনেক ছোটবেলা থেকেই বিশ্বাস করি জীবনের শেষ বছরগুলোর দুঃখ-কষ্ট ও অসম্মানমূলক পরিস্থিতিগুলো অপ্রয়োজনীয়। আমি সেই বিশ্বাসেই কাজ করছি।” কাহনেম্যান আরও লেখেন, “আমি মন পরিবর্তন করতে ভালোবাসি, কারণ এতে বুঝতে পারি আমি কিছু শিখেছি।”

প্রখ্যাত বই "Thinking, Fast and Slow" এর লেখক কাহনেম্যানকে বিশ্বজুড়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আচরণগত অর্থনীতির ক্ষেত্রে অগ্রণী ভাবুক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর গবেষণা মানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার অযৌক্তিকতা এবং অসংলগ্নতাকে চিহ্নিত করে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে।

১৯৩৪ সালে তেল আবিবে জন্মগ্রহণকারী কাহনেম্যান হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং মনোবিজ্ঞানে পিএইচডি অর্জন করেন। তাঁর প্রসিদ্ধ ‘প্রসপেক্ট থিওরি’ সিদ্ধান্ত গ্রহণের মনস্তত্ত্বে এক নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। 

জানা যাচ্ছে যে, কাহনেম্যান তাঁর শেষ ইমেইলে লেখেন, “আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি লজ্জিত নই, তবে এটি জনসমক্ষে আলোচনার বিষয় বানাতে চাই না। পরিবার যতটা সম্ভব মৃত্যুর কারণ নিয়ে তথ্য সীমিত রাখবে।” কাহনেম্যানের পরিবার এবং বন্ধুরা জানান, তাঁর সিদ্ধান্ত ছিল পুরোপুরি ব্যক্তিগত। তিনি কখনোই অন্য কারও জন্য স্বেচ্ছা আত্মহত্যাকে সমর্থন করেননি এবং এই বিষয়টিতে প্রচার চালাননি।

তাঁর অনেক বন্ধু তাঁর পরিকল্পনা জানতেন এবং তাঁকে সেই সিদ্ধান্ত থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছিলেন, তবে তিনি দৃঢ় অবস্থানে ছিলেন। তাঁর এক বন্ধু বলেন, “এটি ছিল কাহনেম্যানের চিন্তাশীল এবং সচেতন সিদ্ধান্ত।”

কাহনেম্যান তাঁর শেষ কথায় লেখেন, “আমি আবিষ্কার করেছি যে অস্তিত্বহীনতা আমাকে ভীত করে না, এবং মৃত্যু আমার কাছে ঘুমানোর মতো, যেখানে আর জেগে ওঠার ব্যাপার নেই। আমাকে নিয়ে দুঃখ করবেন না, আমি আমার জীবনটাকে সুন্দর বানানোর জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।”