
সোমবার ০৫ মে ২০২৫
কৃশানু মজুমদার: সুপার কাপ হাতে তিনি। ট্রফিতে গভীর চুম্বন করছেন। দূরে দেখা যাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের। কার্লেস কুয়াদ্রাতের হোয়াটসঅ্যাপের ডিসপ্লে পিকচারে এখনও সেই ঐতিহাসিক সাফল্যের ছবি উজ্জ্বল। লাল-হলুদকে সরকারি ভাবে বিদায় জানানোর পরেও বদলাননি সেই ছবি। হয়তো বদলাবেনও না। রেখে দেবেন স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে।
সাম্প্রতিক কালে ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু ব্যর্থতাই তাঁদের নিত্যসঙ্গী হয়েছে। কুয়াদ্রাত সেখানে ছিলেন 'হঠাৎ হাওয়ায় ভেসে আসা ধন'। ট্রফি বুভুক্ষু এক ক্লাবকে এনে দিয়েছিলেন সাফল্য। জেতার পথ ভুলে যাওয়া লাল-হলুদকে শিখিয়েছিলেন জয়ের মন্ত্র।
এক যুগ পরে সর্বভারতীয় স্তরের ট্রফিও এনে দিয়েছিলেন লেসলি ক্লডিয়াস সরণির ক্লাবের ক্যাবিনেটে। নতুন এক ভোরের সূচনা করেছিলেন কলকাতা ময়দানের বটবৃক্ষ ক্লাবে। সমর্থকদের চোখে তিনিই হয়ে উঠেছিলেন 'প্রফেসর'। দিনবদলের কারিগর কার্লেস কুয়াদ্রাত ধরা দিয়েছিলেন 'স্বপ্নের ফেরিওয়ালা' অবতারে।
কিন্তু ফলাফল সর্বস্ব এই পৃথিবী বড়ই নিষ্ঠুর। আবেগের ভাষা সে পড়তে জানে না। নিমেষে সে ভুলে যায় সব। একদিন যাঁকে এনে বসিয়েছিল রাজার আসনে, তাঁকেই ছুড়ে ফেলে দিতে দ্বিধাবোধ করে না।
এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে স্মৃতিতে ভাসছে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারির সেই রাতের ছবি। লাল-হলুদ আবিরে ঢেকে গিয়েছিল দেশ। ওই আনন্দঘন রাতে কারা যেন স্লোগান তুলেছিল, '' বাঙাল মোরা..ইস্টবেঙ্গল...উদ্বাস্তু..ইস্টবেঙ্গল.. গর্ব করে...ইস্টবেঙ্গল।'' ২০১৯-য়ে পিতৃহারা লাল-হলুদের 'যিশু' (পড়ুন কুয়াদ্রাত) তাঁর বাবাকে সাফল্যের সেই রাতে অস্ফুটে হয়তো বলে চলেছেন, ''বাবা আমি পেরেছি।'' এই মরশুমে কোথায় ভ্যানিশ হয়ে গেল সেই মানুষটা?
সুপার কাপ জেতার সেই উথালপাতাল আবেগের ঢেউ এই সেপ্টেম্বরে অন্তর্হিত। বছরের গোড়ায় ট্রফি জয়ের আট মাসের মাথাতেই নেমে এল বিপর্যয়। এমনও একটা দিন আসবে, তা কি কলিঙ্গভূমে সেদিন কল্পনা করতে পেরেছিলেন স্প্যানিশ কোচ? হয়তো পেরেছিলেন, হয়তো নয়। সোমবার তাঁর উপরে আকাশ ভেঙে পড়ার পরে কুয়াদ্রাত দার্শনিক। এই প্রতিবেদককে বললেন,''ফুটবল ক্যান বি ক্রুয়েল গেম সামটাইমস। ফুটবল কখনও কখনও নিষ্ঠুর খেলায় পর্যবসিত হয়।''
গত মরশুমে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা তাঁকে হৃদমাঝারে জায়গা দিয়েছিলেন। ম্যাচ জয়ের পরে গ্যালারিতে থাকা লাল-হলুদ সমর্থকদের উদ্দেশে হাত ছুড়ে উদযাপন বা লোগো দেখিয়ে ইঙ্গিত করা, 'আমি তোমাদেরই লোক'-- স্প্যানিশ কোচকে করে তুলেছিল নয়নের মণি। কিন্তু কলকাতার ফুটবল যে বড় নিষ্ঠুর! তিনি সমাদৃত হন, নন্দিত হন আবার নিন্দিতও হন।
গত মরশুমের মধুচন্দ্রিমা চলতি মরশুমের গোড়া থেকেই উধাও। টানা হার, হার এবং হার কুয়াদ্রাতকে পৌঁছে দিয়েছিল অচেনা এক গ্রহে। তাঁর চেনাপরিচিত, আবেগপ্রবণ সমর্থকরাও স্প্যানিশ কোচের উপর থেকে কালক্রমে আস্থা হারিয়ে ফেললেন।উপলব্ধি করেছিলেন ড্রেসিং রুমের আস্থা তিনি হারাচ্ছেন ধীরে ধীরে। গতবছরও যাঁরা কুয়াদ্রাতকে নিয়ে 'ধন্য ধন্য' করেছিলেন, এই মরশুমে তাঁদের কাছ থেকেই 'গো ব্যাক' স্লোগান শুনতে হয়েছিল তাঁকে। চাপ বাড়ছিল স্প্যানিশ কোচের উপরে। ঠিক পজিশনে ঠিক প্লেয়ারকে নামাচ্ছেন না, দলকে এক সুতোয় বাঁধতে পারেননি, সুক্তো রাঁধতে জানা কোচের হাতে এসে পড়েছে বিরিয়ানি রাঁধার মশলা, তাই তিনি গুলিয়ে ফেলছেন সব, এমনই সব মারাত্মক অভিযোগ ধেয়ে আসছিল কুয়াদ্রাতের দিকে। তাঁর বিশ্বস্ত সেনানীরাও সবুজ মাঠে দিকভ্রষ্ট হন।শেষ মেশ নিজের হাতে তৈরি সাম্রাজ্য ছেড়ে চলে গেলেন তিনি। রণে ভঙ্গ দিলেন। অথচ হাল ছাড়ার বান্দা যে তিনি ছিলেন না। ধারে ও ভারে প্রবল শক্তিশালী মোহনবাগানের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়ে গিয়েছেন গত মরশুমে। বহুদিন পরে মোহনবাগানকে মাটি ধরিয়েছিলেন। বিশ্বাস ফিরিয়েছিলেন, 'আমরাও পারি।' স্প্যানিশ কোচের সরে যাওয়ার খবর আছড়ে পড়ছে দেশের সর্বত্র।ইস্টবেঙ্গলের হটসিট ছাড়ার খবর পৌঁছে গিয়েছে স্পেনের সারভেরাতেও।
কার্লেস কুয়াদ্রাতের ভাই জোয়ান অ্যালবার্ট কুয়াদ্রাত আজকাল ডিজিটালকে বললেন, ''দাদার সরে যাওয়ার খবর পেয়েছি। আমার দাদা ইস্টবেঙ্গলে ভালই ছিল। কিন্তু ফুটবলের পৃথিবী যে কেবল ফলাফলটাই বোঝে আর কিছু নয়।'' কার্লেস ও জোয়ানের ভালবাসা ভিন্ন।দাদার শয়নে, স্বপনে, জাগরনে ফুটবল। ভাইয়ের পছন্দ আবার বাস্কেটবল। কুয়াদ্রাতের আচম্বিতে পদত্যাগের খবরে কারও হৃদয় ভেঙেছে, কেউ আবার মনে করছেন, সঠিক সিদ্ধান্ত। ভাই জোয়ান স্পেন থেকে বলছেন, ''ফুটবল এরকমই। সাফল্য পেলে টিকে যাবে, না পেলে সরে যেতে হবে।''
ফুটবলজগতের স্বাভাবিক নিয়মেই ইস্টবেঙ্গলে প্রাক্তন হয়ে গেলেন কুয়াদ্রাত। সামনে আইএসএলের কঠিন সব যুদ্ধ অপেক্ষা করে রয়েছে। মাঠে মরিয়া হয়ে লড়বেন ক্লেটন, তালালরা। দূর থেকে কুয়াদ্রাত সমর্থন করবেন তাঁর প্রিয় ক্লাবকে।
কোনও এক অলস বিকেলে সুপার কাপে গভীরভাবে চুম্বনরত ছবিটা কুয়াদ্রাতকে নিয়ে যাবে ফেলে আসা এক সময়ে। দূরে হয়তো কেউ গেয়ে উঠবেন, ''দিনের পথিক মনে রেখো, আমি চলেছিলেম রাতে, সন্ধ্যাপ্রদীপ নিয়ে হাতে।''
তিন তিনটে হার্নিয়ার ব্যথায় ইনজেকশন দিয়ে খেলতে হত, আরসিবিকে অকপট সাক্ষাৎকারে অজানা রহস্য ফাঁস সুয়াশ শর্মার
এটা কী সেলিব্রেশন? ছেলের বিশ্বসেরা গোলের পর গ্যালারিতে যা করলেন ইয়ামালের বাবা, দেখলে চমকে যাবেন
টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েও চলছে পরীক্ষানিরীক্ষা, সৈয়দ মুস্তাক আলির সেঞ্চুরিয়ানকে ট্রায়ালে ডাকল সিএসকে
'বোলারদের প্রতি অবিচার হচ্ছে', পার্পল ক্যাপ নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে কাদের কথা বললেন কাইফ?
'লামিন ইয়ামাল আর ব্যালন ডি অর', চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাজিকের পর বড়সড় ঘোষণা করে দিলেন রিও ফার্দিনান্দ
ভাঙল ২০ বছরের সংসার, বিবাহ বিচ্ছেদ ঘোষণা মেরি কমের, ওড়ালেন পরকীয়া সম্পর্কের জল্পনাও
কার্গিল প্রসঙ্গ তুলতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ধাওয়ান-আফ্রিদি যুদ্ধ
ভিলেন ধীরজ, সুপার কাপ থেকে বিদায় মোহনবাগানের
ব্রাজিলের হেডস্যর হওয়া আর হচ্ছে না অ্যানচেলোত্তির, রিয়ালের ডাগ আউটেই থাকবেন ইতালীয় কোচ
এএফসি এশিয়ান কাপে ভারতের প্রতিপক্ষ হংকং, তার আগে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ভারত, প্রতিপক্ষ কোন দেশ?
নারায়ণ..নারায়ণ, নাইটদের দিল্লি বিজয়, প্লে অফের দৌড়ে টিকে রইল কলকাতা
ব্রাজিলের কোচ হওয়র দৌড়ে অ্যানচেলোত্তি! রিয়াল কোচকে নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা
দিল্লির মাঠে কলকাতা করল ২০৪ রান, পারবেন কি অক্ষররা?
ভাগ্যের সাহায্য পেয়েছেন বৈভব! ১৪ বছরের বালককে নিয়েও ঈর্ষা শুভমনের, গিলকে একহাত প্রাক্তন তারকার
স্নেহ রানার পাঁচতারা পারফরম্যান্স, ১৫ রানে প্রোটিয়া ব্রিগেডকে হারাল ভারতের মেয়েরা