
রবিবার ০৪ মে ২০২৫
শুভাশিস চট্টোপাধ্যায়: ইলিশ ধরতে যাওয়া তো নয়, কাকদ্বীপের মৎস্যবন্দর এখন যেন এক রণক্ষেত্র। চলছে শেষ মুহূর্তের টাচ, পরীক্ষা এবং নজরদারি। তাই রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে দিনভর ব্যস্ততায় ঘুম ছুটেছে কাঠ থেকে লোহা, ইলেকট্রিক থেকে ইঞ্জিন, পাম্পমোটর মিস্ত্রি থেকে জাল–বুনিয়েদেরও।
কয়েক একর বিস্তৃত বন্দরের এই ঘাটে এবং মাঠে রবিবার সকালে একটা চক্কর দিতেই নজর কেড়ে নিল একের পর এক চোখ–চমকানো ছবি। ঘাটে দাঁড়িয়ে–থাকা প্রায় শ’পাঁচেক ট্রলারের কোনওটার গায়ে নতুন করে লেখা হচ্ছে লাইসেন্স নম্বর, কোনওটায় চলছে রঙের শেষ পোঁচ। কেউ লম্বা–লম্বা শালের গুঁড়ি কাঁধে বয়ে তুলছেন ট্রলারের মাথায়, কেউ বেঁধে চলেছেন রোগা–মোটা, নীল–হলুদরঙা কাছি। কোনও ট্রলারে তোলা হচ্ছে বস্তাভর্তি চাল–ডাল–আলু–সবজি–তেল–নুন–সহ যাবতীয় মশলাপাতি থেকে প্যাকেট–প্যাকেট চা–পাতা, বিস্কুট, চিঁড়ে, মুড়ি, চানাচুর। কোনওটায় উঠছে বরফের বিশাল–বিশাল চাঁই তো কোনও ট্রলারে পানীয় জলের ড্রাম। কেউ আবার জ্বালানি তেল তুলতে ব্যস্ত। কোথাও আবার সেই বরফের চাঁই যত্ন করে রাখার জন্য কাটা হচ্ছে সমান মাপের টিনের পাত, মাছ ধরে রাখার জন্য বিস্তর ক্রেট। কোথাও চলছে নিজস্ব জিপিএস, ফিশ ফাইন্ডার, ওয়াকিটকির শেষ পরীক্ষা। কারণ মাঝদরিয়ায় জলের গভীরতা বা চড়া মাপতে, ভারতের জলসীমা টের পেতে, ট্রলারের গতিপথ নির্দেশে কিংবা মালিকের সঙ্গে ঘন ঘন যোগাযোগ রাখার কাজে এ–সব ডিভাইসই ওঁদের ‘অন্ধের যষ্টি’। ট্রলারে উঠছে ছোট–বড় নানা ফাঁসের, নানা কায়দার একাধিক জাল। মহিলা–পুরুষ নির্বিশেষে এখনও চলছে সেই জাল বোনার কাজ। শুধু তো ইলিশ নয়, কোনও জালে ফাঁসবে লোটে–ভোলা, কোনওটায় চিংড়ি, কোনওটায় পমফ্রেট–রূপচাঁদ, এমন আরও নানা নামের মাছ, এমনকী উঠবে কাঁকড়াও। এদিকে, বন্দরের মাঠে ত্রিপল খাটিয়ে চলছে সেই সব শ্রমিকের জন্য দুপুরের ভাত–মাছ খাওয়ানোর তোড়জোড়। ওদিকে, দূরে বেলুন–কলাপাতায় সাজানো কোনও ট্রলারের বারান্দায় পুরোহিতের হাতে বাজছে শান্তিপুজোর ঘণ্টা। মাঝেমধ্যেই কাজের গতি দেখতে বাইক–হানা দিচ্ছেন ট্রলার–মালিকেরা। আর চারদিকে সমস্ত কর্মযজ্ঞের গোটা তদারকিতে ট্রলারের ক্যাপ্টেন (মাঝি)। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই দিনক্ষণ দেখে যাবতীয় পুজোপাঠ সেরে ট্রলার ভাসিয়ে হল্ট করেছেন নামখানা, হরিপুর, সীতারামপুর, পাথরপ্রতিমায়। ১৪ জুন রাত বারোটার পর সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন ওঁরা। অপেক্ষার রয়েছে ‘দেবী কার্ভিমা’, ‘বলরাম কৃষ্ণ’, ‘দশভুজা’, ‘তারা মা’, ‘বাবা চন্দনগড়’, ‘জয়গুরু’, ‘শঙ্খচক্র’, ‘কন্যামাতা’, ‘সূর্যনারায়ণ’রা। কেউ সদ্য তখনই, কেউ সূর্যোদয়ের মুহূর্তে শুরু করবেন যাত্রা। গঙ্গার উদ্দেশে প্রণাম জানিয়ে ঘাটে বাঁধা কাছি খুলে ট্রলার–মালিক শ্রদ্ধার সঙ্গে তুলে দেবেন ক্যাপ্টেনের হাতে। কেউ সাত দিন, কেউ দশ, কেউ পনেরো দিনের জন্য পরিবার ছেড়ে পাড়ি দেবেন গভীর সমুদ্রে।
‘যাত্রা শুরুর ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টার মধ্যে ‘নামা’য় (মানে দক্ষিণে, বঙ্গোপসাগরে) চলে যাব আমরা। তার পর থেকেই শুরু মাছ ধরার অপারেশন।’ বললেন ‘মা বাসন্তী ২’–এর প্রধান মাঝি বিজয় দাস। পনেরো দিনের জন্য ১৯ জনের টিম নিয়ে ২৫ বছরের অভিজ্ঞ বিজয় যাবেন ইলিশ–জয় যুদ্ধে। তাঁর ট্রলারে থাকছে উনুন–সহ তিনটে গ্যাস সিলিন্ডার, ৪ হাজার লিটার ডিজেল, ৩ হাজার লিটার খাবার জল। নিয়েছেন ২০০ কেজি চাল, দু্শোটা বরফের চাঁই–সহ আরও আরও অনেক জরুরি সামগ্রী। বিজয়ের পাশেই ছিলেন আরেক মাঝি সেন্টু বাগ। বললাম, এবার টার্গেট কেমন? উত্তর দিলেন সেন্টু। ‘এটা আমাদের কাছে জুয়া–লটারির মতো। কারও জালে রাতারাতি উঠল ১০০ মন মাছ তো, কেউ তখনও দৌড়ে বেড়াচ্ছে সমুদ্রের এ–প্রান্ত থেকে ও–প্রান্ত। তাই আগে থেকে ও–সব বলা যায় না।’
এ বছর কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানা–সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন খেয়াঘাট থেকে ছোট–বড় মিলিয়ে পাড়ি দেবে প্রায় তিন হাজার ট্রলার। সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র তথ্যটি দিয়ে বললেন, ‘আরও একটা কথা। সরকারি স্তরে ৫ লাখ টাকার বিমা ছাড়াও ট্রলার–মালিকদের দেওয়া প্রত্যেকের আলাদা করে জীবনবিমা রয়েছে আমাদের খাতায় নথিবদ্ধ মৎস্যজীবীদের জন্য। তা ছাড়াও আপৎকালীন বিপদ সামলাতে এবার নতুন করে বরাদ্দ হয়েছে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা।’ সেন্টু–বিজয়দের কথার জের ধরে জানতে চাইলাম, এ বছর বাঙালির পাতে ইলিশ–সুখ কেমন? সতীনাথ শোনালেন সম্ভাবনার কথা, ‘পাহাড়ে যদি ভাল বৃষ্টি হয় তাহলে নিশ্চিত মিলবে দেদার ইলিশ।’ আপাতত আশায় বাঁচুক চাষা।
মুখ্যমন্ত্রীর মুর্শিদাবাদ সফরে বড়সড় বদল, নতুন সফরসূচি জানিয়ে দিল প্রশাসন
বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে অপহৃত কৃষক উকিল বর্মন, বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলেন রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি
শুধু সি-ফেসিং নয়, হোটেল হতে হবে মন্দির-ফেসিং, দিঘায় তুঙ্গে চাহিদা
বিজেপি বনাম বিজেপি, পশ্চিম মেদিনীপুরের রাস্তায় দুই গোষ্ঠীর মারপিট
আইএসসি পরীক্ষায় রাজ্যে দ্বিতীয় ও পঞ্চম স্থানে কোচবিহারের আত্রেয়ী-অনুষ্কা
আইসিএসই পরীক্ষায় ৯৯.০৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়ে দিল হুগলির পড়ুয়া
অনুষ্ঠানে গিয়ে আচমকা অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি সাংসদ সৌগত রায়
সভাপতির নাম ঘোষণা হতেই শুরু হল তুমুল বাগবিতণ্ডা, সাংসদের সঙ্গে তর্কাতর্কি বিদায়ী সভাপতির
'ভগবানের কাছে এসেছি, যাঁরা বুঝতে পারছেন না ভগবান তাঁদের সুমতি দিন', দিঘায় জগন্নাথধাম দর্শনের পর জানালেন দিলীপ
স্ত্রীকে খুনের পর দুই শিশু সন্তানের গলায় ভোজালি ধরে ঘরবন্দি, ঘটনা হার মানাবে ক্রাইম থ্রিলারকেও
বাংলাদেশি সন্দেহে গুজরাট পুলিশের হাতে আটক বাংলার ৩ যুবক, ‘দিদিকে বলো'-তে অভিযোগ পরিবারের
গ্রামের মহিলাদের মধ্যে ভরসা ফেরাতে সামশেরগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরছে 'উইনার্স'
ডাম্পার ও অটোর মুখোমুখি সংঘর্ষ, মৃত্যু হল ১০ বছরের নাবালিকার
নির্জন জঙ্গলে পাখির ডাক, দূরে বরফের হাতছানি, গরমে যেতে পারেন শান্ত নিরিবিলি এই গ্রামে
'তীর্থস্থান সবার জন্য', দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে মহাযজ্ঞে উপস্থিত হয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী