
সোমবার ০৫ মে ২০২৫
বীরেন ভট্টাচার্য: বৃহস্পতিবার শেষ হল ষষ্ঠ দফার ভোটের প্রচার। শেষ লগ্ন জোরকদমে প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাহুল গান্ধী, মমতা ব্যানার্জি, অভিষেক ব্যানার্জি থেকে শুরু করে অখিলেশ যাদব। এই দফায় ৬টি রাজ্য এবং দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভোটগ্রহণ হতে চলেছে। দিল্লির ৭টি কেন্দ্রেই ভোট হতে চলেছে ২৫ মে শনিবার। ষষ্ঠ দফায় বিহারের ৮টি, হরিয়ানায় ১০টি, ঝাড়খণ্ডে ৪টি, দিল্লির ৭টি, ওড়িশার ৬টি, উত্তরপ্রদেশের ১৪টি এবং পশ্চিমবঙ্গে ৮টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ-রাজৌরি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এই আসনটিতে ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন ২০ জন প্রার্থী। ষষ্ঠ দফায় শাসক বিরোধী সব মিলিয়ে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৮৮৯জন। রাজ্যের যে সব আসনগুলিতে ভোট হতে চলেছে সেই তালিকায় রয়েছে তমলুক, কাঁথি, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর। অর্থাৎ এই পর্বে মূলত জঙ্গলমহলের আসনগুলিতে ভোট গ্রহণ হবে। উত্তরপ্রদেশের ভোটের তালিকায় রয়েছে সুলতানপুর, প্রতাপগড়, ফুলপুর, এলাহাবাদ, আম্বেদকরনগর,শ্রাবস্তী, দোমরিয়াগঞ্জ, বস্তি, সন্ত কবীরনগর, লালগঞ্জ, আজমগড়, জৌনপুর,মছলিশহর এবং ভাদোহি। তারমধ্যে ভাদোহি আসনে ভোটের লড়াই করছে সপা এবং কংগ্রেস সমর্থিত তৃণমূল প্রার্থী ললিতেশপতি ত্রিপাঠী। উত্তরপ্রদেশের আসনগুলির মধ্যে আজমগড় গুরুত্বপূর্ণ আসন। মুসলিম এবং যাদব অধ্যুষিত এই আসনে সরাসরি লড়াই বিজেপির প্রার্থী দিনেশলাল যাদব নিরাহুয়া এবং সপা প্রার্থী ধর্মেন্দ্র যাদবের।
দোমরিয়াগঞ্জে বিজেপি প্রার্থী বিজেপি নেতা জগদম্বিকা পাল। তাঁর বিরুদ্ধে সপা প্রার্থী ভীষ্মশঙ্কর তিওয়ারি এবং বিএসপির খাজা শামসুদ্দিন।রাজ্যের ৮টি আসন যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ। বাঁকুড়ায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী অরুপ চক্রবর্তী। সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ এবং দলীয় নেতা কর্মীরা। তাঁর বাড়ি ঘেরাওয়ের খবরে মাসখানেক আগেই অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি। মেদিনীপুরে ফ্যাশন ডিজাইনার বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পলের বিরুদ্ধে তৃণমূলের বাজি রূপালি পর্দার জুন মালিয়া। বিষ্ণুপুরের সৌমিত্র খান এবং সুজাতার লড়াই। তমলুকে বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির বিরুদ্ধে ঘাসফুলের বাজি তরুণ তুর্কি দেবাংশু ভট্টাচার্য। এই দফার ভোট শুভেন্দু অধিকারীর মানরক্ষার লড়াই। কাঁথিতে দিব্যেন্দু অধিকারীকে আটকাতে তৃণমূল প্রার্থী করেছে উত্তম বারিককে। কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারির পরবর্তীতে লোকসভা ভোট হতে চলেছে দিল্লিতে। যদিও রাজধানীর ভোটারদের বক্তব্য, রাজ্য সরকারের উন্নয়নের কারণেই দিল্লিতে ভাল ফল করবে আপ এবং কংগ্রেসের জোট।
প্রসঙ্গত, এই প্রথমবার দিল্লিতে জোট গড়ে লড়াই হতে চলেছে আপ এবং কংগ্রেসের। ২০১৪ সাল থেকে দিল্লির সবকটি আসনেই জয়লাভ করেছে বিজেপি। তবে প্রতিবারই ভোট ভাগাভাগি হয়েছে। এবার তার কোনও সম্ভাবনা না থাকায় বিজেপির সেই রেকর্ডের হ্যাটট্রিক করার আশা ক্ষীণ। গতবারের সাতজন প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র মনোজ তিওয়ারি ছাড়া আর কাউকে টিকিট দেয়নি কেন্দ্রের শাসকদল। বাদ পড়েছেন বিদেশমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী মীনাক্ষি লেখিও। শেষ দফার প্রচারে সপা নেতা অখিলেশ যাদব বলেন, "বিজেপি কোনও প্রতিশ্রুতি পূরণ না করায় মানুষ ক্ষুব্ধ। মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারত্ব মাত্রাছাড়া। এই ভোট হিন্দু-মুসলিম বা ভারত-পাকিস্তানের ভোট নয়। এটা সংবিধান রক্ষার লড়াই।" আরজেডি নেত্রী মিশা ভারতী বলেন, "যে ৫ থেকে ১০ হাজার ভোট বিজেপি পাচ্ছিল এবার সেটাও হাতছাড়া হবে তাদের। বিহারের মানুষকে বঞ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। কাজের জন্য তেজস্বী যাদবের পক্ষে বিপুল সমর্থন রয়েছে। তার ফল পাবে সমগ্র ইন্ডিয়া জোট।" এদিন হরিয়ানায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভঢ়রা বলেন, "হরিয়ানায় বিজেপি বিরোধী ঢেউ রয়েছে। বিজেপির রাজনীতির প্রতি বিরক্ত সাধারণ মানুষ। এবার পরিবর্তন আসবেই।"