
সোমবার ০৫ মে ২০২৫
নীলাঞ্জনা সান্যাল: দু’চোখ জুড়েই আঁধার নম্রতার। জন্মান্ধ সে। গোটা জগৎটাই ওর কাছে অন্ধকারময়। দু’চোখের এই অন্ধকার দূর করতে তাই শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়ার লড়াই চালাচ্ছে। জন্ম থেকেই ৮০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধকতা অরিত্রের। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরা। হাজার প্রতিবন্ধকতা যে মনের জোর আর ইচ্ছাশক্তি দিয়ে জয় করা যায় তারই উজ্জ্বল উদাহরণ নম্রতা আর অরিত্র। সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে দু’জনেই এ বছর উচ্চমাধ্যমিকে তাক লাগানো রেজাল্ট করেছে। নম্রতা পেয়েছে ৮২.৫ শতাংশ নম্বর। আর অরিত্র ৭২ শতাংশ। একেই বোধহয় বলে উত্তরণ।
নম্রতার বাড়ি হুগলির হরিপালে। মাধ্যমিক পর্যন্ত উত্তরপাড়া লুই ব্রেল মেমোরিয়াল হাইস্কুলে পড়াশোনা। উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছিল উত্তরপাড়া মাখলা হাইস্কুল থেকে। বাবা মনসারাম ঘোষ জানালেন, ব্রেইল পদ্ধতি আর অডিও শুনে পড়াশোনা করেছে নম্রতা। সার্বিক গ্রেড ‘এ+’। মিউজিকে পেয়েছে সর্বোচ্চ গ্রেড ‘ও’। ছোট থেকেই গান শেখে নম্রতা। ওর কাছে পড়াশোনার বাইরের জগৎই হল গান। ভবিষ্যতে সঙ্গীত নিয়েই পড়াশোনা করতে চায় সে। সঙ্গীত নিয়ে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তি হতে চায়। মেয়ের চোখের দৃষ্টি ফেরাতে ছোটবেলায় অনেক চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা, কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি বলে জানান মনসারামবাবু। বলেন, আমি মিলিটারিতে চাকরি করতাম। এখন অবসর নিয়েছি। মেয়ে যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, চোখের অন্ধকার যাতে ওর জীবনে প্রতিবন্ধক হয়ে না দাঁড়ায় সেই চেষ্টাই করছি। ছোট নম্রতা মা নমিতাদেবীর সঙ্গে হরিপাল থেকে রোজ ঘণ্টা দেড়েকের ট্রেন জার্নি করে উত্তরপাড়ার স্কুলে আসত। স্কুলেই থাকতেন নমিতাদেবী। একেবারে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরতেন। মনসারামবাবুর কথায়, ওর সঙ্গে এই লড়াইটা আমরাও প্রতিনিয়ত লড়ছি। কিছুটা পথ এসেছি, এখনও অনেকটাই চলা বাকি।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে অরিত্রর আরও একটি দুর্লঙ্ঘ বাধা হল আর্থিক অনটন। বাবা প্রশান্ত বাগ একটি ছোট প্লাস্টিকের কারখানায় সামান্য শ্রমিক। করোনাকালের আর্থিক ক্ষত এখনও সংসারের গায়ে। মা কাবেরী বাগ ছেলের দেখাশোনা করে অন্য কিছু আর করে উঠতে পারেন না। কিন্তু এসব কিছুই দমিয়ে রাখতে পারেনি অরিত্রকে। দমদম শ্রী অরবিন্দ বিদ্যামন্দির থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে অরিত্র। নিজের পায়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, চলতে হয় হামাগুড়ি দিয়ে। কাবেরীদেবীই কোলে করে ছেলেকে স্কুলে নিয়ে আসতেন। ছেলের সঙ্গে সারা দিন থেকে ক্লাস শেষে ওকে নিয়ে বাড়ি ফিরতেন। স্কুলের পক্ষ থেকে সব রকম সাহায্যই করা হত। মাধ্যমিকে ৫৪ শতাংশ নম্বর পাওয়ার পর প্রধান শিক্ষক নানারকম অনুদানের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন যাতে আর্থিক কারণে পড়াশোনা বন্ধ না হয় বলে জানালেন কাবেরীদেবী। আর প্রধান শিক্ষক অসীমকুমার নন্দ বলেন, ‘আমরা শিক্ষকেরা হলাম ফ্যাসিলিটেটর, সাহায্যকারী। অরিত্র তার নিজের মেধা ও পরিশ্রমে আজ এই সাফল্য পেয়েছে। স্কুলের প্রথম হওয়া ছাত্রের থেকে অরিত্রর এই সাফল্য কোনও অংশে কম নয়। অরিত্রর ক্ষেত্রে লড়াইটা অনেক বেশি কঠিন। আমি চাইব এইভাবেই সকল বাধা কাটিয়ে ও জীবনের লড়াইকে জয় করুক। আমরা ওর পাশে আছি।’
মুখ্যমন্ত্রীর মুর্শিদাবাদ সফরে বড়সড় বদল, নতুন সফরসূচি জানিয়ে দিল প্রশাসন
বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে অপহৃত কৃষক উকিল বর্মন, বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলেন রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি
শুধু সি-ফেসিং নয়, হোটেল হতে হবে মন্দির-ফেসিং, দিঘায় তুঙ্গে চাহিদা
বিজেপি বনাম বিজেপি, পশ্চিম মেদিনীপুরের রাস্তায় দুই গোষ্ঠীর মারপিট
আইএসসি পরীক্ষায় রাজ্যে দ্বিতীয় ও পঞ্চম স্থানে কোচবিহারের আত্রেয়ী-অনুষ্কা
আইসিএসই পরীক্ষায় ৯৯.০৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়ে দিল হুগলির পড়ুয়া
অনুষ্ঠানে গিয়ে আচমকা অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি সাংসদ সৌগত রায়
সভাপতির নাম ঘোষণা হতেই শুরু হল তুমুল বাগবিতণ্ডা, সাংসদের সঙ্গে তর্কাতর্কি বিদায়ী সভাপতির
'ভগবানের কাছে এসেছি, যাঁরা বুঝতে পারছেন না ভগবান তাঁদের সুমতি দিন', দিঘায় জগন্নাথধাম দর্শনের পর জানালেন দিলীপ
স্ত্রীকে খুনের পর দুই শিশু সন্তানের গলায় ভোজালি ধরে ঘরবন্দি, ঘটনা হার মানাবে ক্রাইম থ্রিলারকেও
বাংলাদেশি সন্দেহে গুজরাট পুলিশের হাতে আটক বাংলার ৩ যুবক, ‘দিদিকে বলো'-তে অভিযোগ পরিবারের
গ্রামের মহিলাদের মধ্যে ভরসা ফেরাতে সামশেরগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরছে 'উইনার্স'
ডাম্পার ও অটোর মুখোমুখি সংঘর্ষ, মৃত্যু হল ১০ বছরের নাবালিকার
নির্জন জঙ্গলে পাখির ডাক, দূরে বরফের হাতছানি, গরমে যেতে পারেন শান্ত নিরিবিলি এই গ্রামে
'তীর্থস্থান সবার জন্য', দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে মহাযজ্ঞে উপস্থিত হয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী